ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় -ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তালিকা

ভিটামিন ডি আমাদের হাড়কে মজবুত করার পাশাপাশি করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহযোগিতা করে। আমাদের দাঁত সুস্থ রাখার জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান এই ভিটামিন ডি। এজন্য আমাদের ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় -ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তালিকা

মানুষের শরীরের জন্য ভিটামিন ডি খুব প্রয়োজন একটি উপাদান। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। ভিটামিন ডি এর অভাব যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় -ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তালিকা

ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়

অনেক কারণে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। আপনারা জেনে থাকবেন যে শহরের মানুষের ভিটামিন ডি এর অভাব বেশি দেখা দেয়। এর অন্যতম একটি কারণ হলো এদের শরীর সঠিকভাবে সূর্যের আলো পায় না। কোন খাবারে কোন ভিটামিন আছে এটা আমরা অনেকেই জানিনা। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার না খাওয়ার কারণে এর অভাব দেখা দেয়। একটি মানুষ যখন দীর্ঘ সময় ঘরের ভেতর কাটিয়ে দেয় , সূর্যের আলোর সংস্পর্শে যায় না তাদেরই এই রোগ বেশি হয়।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন ডি এর হবে অনেক সমস্যা হতে পারে। আপনার শরীরে যখন ভিটামিনের অভাব দেখা দেবে তখন আপনার মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যাবে। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের মাংস পেশী  কাঁপতে থাকে, এটাই ভিটামিন ডি এর অভাব এর কারণে হয়। আমাদের মনে বিষন্নতা বেড়ে যায়, বিষন্নতা বাড়ার ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরো পডুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

অনেক সময় দেখে থাকবেন মাথা ব্যথা করে আবার বেশি চুল পড়ে এটা কিন্তু ভিটামিন ডি এর ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে। ক্ষতস্থান  শুকাতে অনেক দেরি হয় এটা ভিটামিন ডি এর অভাবে হতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের কি রোগ হয়

আপনারা কম বেশি একটা রোগের সাথে পরিচিত আর সেটা হল শিশুদের রিকেট রোগ। শিশুদের এই রিকেট রোগ ভিটামিন ডি এর কারনে হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি এর কারণে রিকেট রোগ হলে শিশুদের মাথার খুলি বড়  হতে পারে, পা বেঁকে যেতে পারে। দীর্ঘদিন এই রোগ ধরিরে পোষণ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কি রোগ হয়

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেট রোগ হয়, আর বড়দের হাড় পাতলা হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলে । এর ফলে সহজেই হার ভেঙে যেতে পারে। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি রয়েছে যাদের এজমা রোগ আছে। এই এজমা রোগ কিন্তু ভিটামিন ডি অভাব এর কারনে হতে পারে ।

আপনারা খেয়াল করে থাকবেন যে অল্প একটু কাজ করার পরে বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পরে একটু জোরে জোরে হাঁটা চলাফেরা করলে অনেক সময় হারিয়ে যান এরকম কোন লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন আপনার ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে। বড়দের ক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যা হল বিষন্নতা বা ভালো ঘুম হয় না। এজন্য ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি।

ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়

ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে শরীরে বিভিন্ন রোগ হবে এটাই স্বাভাবিক। ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে করণীয় , সঠিক নিয়মে সূর্যের আলোতে যেতে হবে। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে। কোন কোন খাদ্যে ভিটামিন ডি যুক্ত আছে সেই সব খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাজার থেকে বিভিন্ন ঔষধ কিনে ফেলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করা যায়।

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা

আমরা যদি আমাদের সন্তানকে সঠিকভাবে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার বা ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়াই তাহলে সন্তান সুস্থ এবং সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে। আর যদি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার না খাওয়ান তাহলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই অবশ্যই আমাদের উচিত খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার নিযুক্ত করা। ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়? ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার কি কি তা নিয়ে আলোচনা করব।

গরুর কলিজা: গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি এর উপাদান পাওয়া যায়। যদি আপনি ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে নিয়মিত গরুর কলিজা খাওয়া। ভিটামিন ডি এর পাশাপাশি অন্যান্য উপাদানও  রয়েছে গরুর কলিজাতে।

বাদাম: বাদাম খেতে কে না ভালোবাসে। আর এই বাদাম হল ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার এর অন্যতম একটি উৎস। নিয়মিত বাদাম খেলে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আপনি যদি বাদাম ভর্তা করে খান সে ক্ষেত্রে ও ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে।

দুধ: ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে দুধ আরও একটি । গরুর দুধে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। নিয়মিত গরুর দুধ পান করলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে।

ডিমের কুসুম: ডিম সহজ লভ্য এবং বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্য । আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ডিম রাখতে পারেন। ফলে আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে। আপনি যদি আপনার শিশুকে নিয়মিত ডিমের কুসুম খান তাহলে তারা ঠিক ভাবে বেড়ে উঠবে।

সামুদ্রিক এবং চর্বিযুক্ত মাছ: সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকায় আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ রাখা উচিত।  মাছের চর্বিতে প্রয়োজনের সব ভিটামিন রয়েছে এজন্য আপনার খাদ্য তালিকায় চর্বিযুক্ত মাছ রাখুন।

মাশরুম: বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বর্তমানে আমাদের দেশেও মাশরুম এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে মাশরুম অন্যতম। আপনি নিয়মিত মাশরুম খেতে পারলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে।

সূর্যের আলো: সূর্যের আলো থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে উত্তম উৎস হলো সূর্য। তাই আপনি যদি নিয়মিত সকালে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রোদে থাকেন তাহলে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকবে না।

ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি

আমাদের দেশে কিছু শাকসবজি রয়েছে যেগুলো ভিটামিন বি দ্বারা পরিপূর্ণ। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ সবজি হল ব্রকলি এবং কপি। ব্রকলি তে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। শাক এবং সবজি হিসেবে কপি আমাদের কাছে অনেক পরিচিত এটাতেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়

আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বেড়ে গেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন ডি বেশি পরিমাণ গ্রহণ করলে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। যার ফলে খিদে কমে যাওয়া পেটে ব্যথা বমি বমি ভাব কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়েরির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি এর ঔষধ খেতে পারেন।

ভিটামিন ডি এর উপকারিতা

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার বা ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে শক্তি বাড়ায় শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে হলে আমাদের পেশী শক্তি বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে  শরীরে ভিটামিন ডি এর কোন ঘাটতি থাকে না। ওজন কমাতে ভিটামিন ডি সাহায্য করে। ভিটামিন ডি আমাদের পরিশ্রম করার ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্লান্তি কমিয়ে তুলে ।

শেষ কথা: ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় -ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার তালিকা সবকিছু সম্পর্কে আমরা জানলাম। এখানে আরো একটি কথা বলে রাখি যে এখানে আমরা কোন ঔষধের নাম উল্লেখ করেনি কারণ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধে খাওয়া উচিত না। আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের পাশে থাকবেন এবং নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। সবাই ভালো থাকবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url