মেয়েরা পরকীয়া করে কেন - পরকীয়া নারী চেনার উপায়

আপনি কি জানেন মেয়েরা পরকীয়া করে কেন? এবং পরকীয়া নারী চেনার উপায় কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন। কেননা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হলো মেয়েরা পরকীয়া করে কেন এবং পরকীয়া নারী চেনার উপায় কি।সুতরাং, আর দেরি না করে ঝটপট সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে নিয়ে মেয়েরা পরকীয়া করে কেন এবং পরকীয়া নারী চেনার উপায় কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

মেয়েরা পরকীয়া করে কেন - পরকীয়া নারী চেনার উপায়

আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি যেমন জানতে পারবেন যে, মেয়েরা পরকীয়া করে কেন। তেমনি এর পাশাপাশি আরও জানতে পারবেন স্ত্রী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় কি, পরকীয়া ধরার উপায় কি, পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় কি, পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল কি, বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি ইত্যাদি বিষয়াবলী সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মেয়েরা পরকীয়া করে কেন - পরকীয়া নারী চেনার উপায়

মেয়েরা পরকীয়া করে কেন - পরকীয়া নারী চেনার উপায়ঃ ভূমিকা

সাধারণত একজন মেয়ে তার বিয়ের পরে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে তখন তাকে পরকীয়া বলা হয়। কিন্তু এখানে প্রশ্নের বিষয় হলো স্বামী থাকা সত্বেও মেয়েরা পরকীয়া করে কেন? আমরা যদি এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে যায় তাহলে বেশ কতগুলো বিষয়কে আপনাদের সামনে যথাযথভাবে উপস্থাপন করার এবং ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়বে। কেননা মেয়েরা পরকীয়া করে কেন এই প্রশ্নের উত্তর কেবলমাত্র এক কথায় দেওয়া সম্ভব নয়। 

আর সেজন্যই আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মধ্যে মেয়েরা পরকীয়া করে কেন এ বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করব এবং আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে এর পেছনের উপযুক্ত কারণগুলোকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল 

মেয়েরা পরকীয়া করে কেন

বর্তমানে আমাদের সমাজের সব থেকে বড় একটি সমস্যার নাম হচ্ছে পরকীয়া। ইদানিং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে অনেক মেয়ে জড়িয়ে পড়ছে। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব মেয়েরা পরকীয়া করে কেন। যে সকল কারণে মেয়েরা পরকীয়া করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলঃ

শারীরিক চাহিদা

পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নারীদের মধ্যে যে বিষয়টি সব থেকে বেশি লক্ষ্য করা যায় তা হচ্ছে শারীরিক চাহিদা। এটিকেই মূলত পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার পেছনের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।সাধারণত স্বামী যদি স্ত্রীর শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে না পারে সেক্ষেত্রে মেয়েরা অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়। 

ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি

স্বামী এবং স্ত্রী উভয় আলাদা মানুষ হওয়ার ফলে তারা প্রত্যেকে তাদের জীবনকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে থাকে। একে-অন্যের সম্পর্কে না জেনে হুট করেই বিয়ে করে ফেললে পরবর্তীতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।অনেক সময় দেখা যায় দুইজনের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য  দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। সেক্ষেত্রে স্ত্রী এই সমস্ত মতপার্থক্যের বিষয়গুলোকে মেনে নিতে না পেরে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। 

একে অন্যকে গুরুত্ব না দেওয়া

সাংসারিক জীবনে একে অন্যকে গুরুত্ব দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান বিষয়। কেননা আপনি যখন আপনার সঙ্গীকে গুরুত্ব দেবেন না তখন সে অন্য কাউকে খুঁজতে থাকবে। যার ফলে স্ত্রী যখন অন্য কোন জায়গা থেকে সেই গুরুত্বটুকু পায় তখন সেখান থেকেই সে আরেকটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। 

আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুম আসে না কেন - রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবেগের অভাব

বর্তমান সময়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার কারণগুলোর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবেগের অভাব বিষয়টি পরিলক্ষিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। সাধারণত সারাদিনের ব্যস্ততায় সময়ের অভাব থেকে দুইজনের মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়। আর মূলত সেটা থেকেই পরকীয়ার সূত্রপাত  হয়। 

দুজন দুজনকে মানিয়ে নিতে না পারা

অনেক সময় দেখা যায় পারিবারিক চাপে অনেকেরই বিয়ে হয়। সেক্ষেত্রে নতুন পরিবেশে অনেক নারী নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারেন না। নতুন পরিবেশে গিয়ে নিজেকে অনেক একা মনে করতে থাকে।আর তখন এই রকম পরিস্থিতিতে নিজের একাকীত্ব দূর করতে গিয়ে অনেকেই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। 

অতি অল্প বয়সে বিয়ে

খুব কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হলে মেয়েদের পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি বেড়ে যায়।অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অল্প বয়সের মেয়েদের মানসিক স্থিতি না থাকার কারণে তারা সমবয়সী অন্য একটি ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। 

অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা

কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা পারিবারিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে নারীরা অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা সংবলিত অন্য কোন পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। 

আশা করছি আমাদের উপরের আলোচনা থেকে আপনি মেয়েরা পরকীয়া করে কেন সে বিষয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। কিন্তু এখন শুধুমাত্র মেয়েরা পরকীয়া করে কেন সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেলেই হবে না আমাদেরকে এটাও জানতে হবে যে, পরকীয়া নারী চেনার উপায় কি কি। আর এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আমরা নিম্নে এই বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছি।

পরকীয়া নারী চেনার উপায়

অনেক নারী আছেন যারা সম্পর্কের একঘেয়েমি ভাব কাটাতে জেনে শুনেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।পরকীয়ায় দুইজন জড়িয়ে পড়লেও মূলত যে কোন একজন ক্রমশ চাপে পড়তে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনি আপনার স্ত্রীর দৈনন্দিন কার্যক্রম কথা-বার্তার ধরন ইত্যাদি দেখে আপনার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে গেছে কিনা তা বুঝতে পারবেন। চলুন পরকীয়া নারী চেনার উপায় হিসেবে এই ধরনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • আপনি যদি দেখেন আপনার স্ত্রী হঠাৎই আপনার দৈনন্দিন রুটিন সম্পর্কে আপনাকে প্রশ্ন করছে যেমন আপনি কখন বাড়ি ফিরবেন কখন কোথায় যাবেন ইত্যাদি। অর্থাৎ, তিনি আপনার অনুপস্থিতিতে কিছু একটা করতে চাচ্ছেন আর সেটি পরকীয়া হতে পারে। 
  • আবার যদি দেখেন আপনার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইদানিং উদাসীনতা বা উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে তবে আপনি তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে পারেন। কেননা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার পরে এই সমস্যাটা সবথেকে বেশি বোঝা যায়। তবে ভালোভাবে লক্ষ্য না করে বা খোঁজ না নিয়ে সরাসরি আপনি আপনার সঙ্গীকে দোষারোপ করতে পারেন না। কেননা কত ক্ষেত্রে দেখা যায় শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। 
  • আবার এটাও খেয়াল রাখবেন যে আপনার সঙ্গী শুধুমাত্র অভ্যাসবশত আপনাকে সঙ্গ দিতেই শারীরিক মেলামেশার সঙ্গ দিচ্ছে কিনা। যদি এমনটা হয় তাহলে আপনার সঙ্গীর প্রতি বিশেষ নজর রাখুন। 
  • যদি আপনি আপনার সঙ্গীর মুখে বারবার কোন একটি নাম শুনতে থাকেন সেক্ষেত্রে একটু সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। এবং উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে যথাযথ খোঁজ-খবর নেওয়া দরকার। আবার নারী সঙ্গীকে সরাসরি দোষারোপ করা যাবে না, কেননা অনেক সময় কোনো ব্যক্তির কথা এবং কাজের দ্বারা অতিরিক্ত মাত্রায় প্রভাবিত হয়ে পড়লেও এমনটা হতে পারে। 
  • বর্তমান সময়ে সব থেকে বেশি যেটা লক্ষ্য করা যায় তা হচ্ছে নারী সঙ্গী মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন এবং সেখান থেকেই পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাই আপনার সঙ্গী পূর্বের তুলনায় হুট করে যদি মোবাইল ইন্টারনেটের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে তার প্রতি বিশেষ নজর রাখুন।

[ বি.দ্রঃ উপরে উল্লেখিত কারণগুলো বা পরিস্থিতি গুলো কেবলমাত্র আমাদের ধারণা এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোকে আপনি কখনোই কোন প্রমাণ ছাড়া আপনার সঙ্গীর আচার-ব্যবহারের সাথে মিলিয়ে তাকে দোষারোপ করবেন না। ]

স্ত্রী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় । পরকীয়া ধরার উপায় 

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে আমৃত্যু সম্পর্কের সৃষ্টি হয় বলাবাহুল্য যে, পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই এই আমৃত্যু সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। আপনার সঙ্গী পরকীয়ায় আসক্ত কিনা তা ধরার কিছু উপায় রয়েছে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক স্ত্রী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় বা পরকীয়া ধরার উপায় সমূহ কি কি।

১। আপনার সঙ্গী যদি মোবাইল কিংবা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে তার প্রতি বিশেষ নজর রাখুন। কতটা সময় মোবাইল এবং ইন্টারনেট এর সঙ্গে যুক্ত থাকছে তা খেয়াল রাখুন। একসাথে বসে থাকা অবস্থায় বা কোথাও ঘুরতে গেলে যদি তিনি ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন কিংবা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেন তাহলে অনেকাংশেই নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, তিনি অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।

তবে অনেকেই বলতে পারেন কাজের প্রয়োজনে মানুষের ফোনের ব্যবহার বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু এটি মাথায় রাখতে হবে যে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হতে পারে, কিন্তু তা সবসময়ের জন্য নয়। 

২। আবার আপনার জীবনসঙ্গী যদি আপনার পরিবারের সদস্যদেরকে কম সময় দেওয়া শুরু করে তাহলে এটিও একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা যায়। সতর্কতার সঙ্গে আপনি আপনার সঙ্গীর প্রতিদিনের কাজকর্ম লক্ষ্য করুন। যদি বুঝতে পারেন যে, সে আপনাকে কম সময় দেওয়া শুরু করেছে তাহলে খোঁজ নিন আপনার সঙ্গী ওই সময়টা কোথায় ব্যয় করছে। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা বোঝার উপায় জেনে নিন

এজন্য আপনি তাকে একসঙ্গে বসে টিভি দেখার কথা বলতে পারেন কিংবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করা সম্পর্কে বলতে পারেন। যদি দেখেন যে, সে আগের তুলনায় আগ্রহ কম দেখাচ্ছে কিংবা বিরক্তি প্রকাশ করছে। তাহলে তাড়াহুড়া না করে ধীর-স্থির ভাবে তার ওপর নজর রাখুন।

৩। আপনার সঙ্গী যদি প্রায় কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে রেগে যায় সেক্ষেত্রে মিলিয়ে দেখুন আপনার সঙ্গী আগে কি রকম আচরণ করতো। কেননা বিনা কারণে অযৌক্তিক রাগ কিংবা মেজাজ খিটখিটে থাকা পরকীয়ার অন্যতম লক্ষণ। 

৪। যদি আপনার স্ত্রী বা নারী সঙ্গী আপনাকে অন্য কোন পুরুষের সাথে প্রায় তুলনা করতে থাকে, সেক্ষেত্রে এটিকেও আপনার নারী সঙ্গীর পরকীয়ায় আসক্ত হওয়ার পেছনের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে দেখতে পারেন।

আমরা আবারও বলছি আপনার সঙ্গী সম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত না হয়ে কখনোই তাকে সন্দেহ করবেন না। কেননা অতিরিক্ত সন্দেহ করা যেকোনো সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার পেছনের অন্যতম একটি কারণ। 

পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় । পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল

বর্তমান সময়ে পরকীয়ার বিষ বাষ্পে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের পরিবার ও সমাজ। এখন পরকীয়া একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই অংশে পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় বা পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল হিসেবে ইসলাম সম্মত কিছু আমল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সমস্ত আমল গুলো কি কি। 

ইসলাম ধর্মে পরকীয়া থেকে বাঁচার জন্য যে নীতিমালা এবং নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত এবং কার্যকরী। প্রতিটি মানুষের জন্য ইসলাম খোদা ভীরুতা, দুনিয়া বিমুখতা এবং কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহিতা অর্জনের প্রতি জোর দিয়েছে। মৃত্যুর পরের জবাবদিহিতা সম্পর্কে যদি অন্তরে ভীতি স্থাপন করা যায় তাহলে পরকীয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়ে যায়। 

আল্লাহ তা'আলা বলেন, "হে মানব সকল! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার জীবন সঙ্গিণীকে সৃষ্টি করেছেন। আর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। (সূরা নিসা-১)।" 

পাশাপাশি ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে নৈতিক শিক্ষা অর্জনের তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহর দেওয়া আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিক শক্তির উপর সন্তুষ্ট থেকে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে বলেছে। পরকীয়া থেকে মুক্তির জন্য দাম্পত্য জীবনকে আল্লাহর দেয়া একটি বিশেষ নিয়ামত বলে মনে করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত - ব্যায়াম করার পর খাবার তালিকা 

এছাড়াও যাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা এবং আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় সেই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ইসলামে বলা আছে। যেমনঃ একই পাত্রে খাবার খাওয়া, একে অন্যের মুখে খাবার তুলে দেওয়া এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে কেউ অসুস্থ এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে দুর্বল বোধ করলে তাকে সান্ত্বনা এবং সাহস দেওয়া। 

হযরত খাদিজা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু সবসময় আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাই ওসাল্লাম এর দুঃখ-কষ্টে তার পাশে ছিলেন।  কাজে-কর্মে এবং ইসলাম প্রচারে নবীকে সাহস যোগিয়েছেন। এর পাশাপাশি পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় এবং পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল হিসেবে পর স্ত্রী কিংবা পর নারীর সাথে কথা বলা দেখা-সাক্ষাৎ করার প্রসঙ্গে ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর এই বিষয়ের প্রমাণস্বরূপ নিম্নে কুরআনের কতগুলো আয়াত উল্লেখ করা হলোঃ 

আল্লাহ বলেন, "হে নবী! মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। ইহাই তাদের জন্য উত্তম। ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সূরা নূর ৩০-৩১)।"

আল্লাহ পাক আরো বলেনঃ "যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পর পুরুষের সঙ্গে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে যার অন্তরে ব্যাধি আছে সে কুবাসনা করে। তোমরা সঙ্গত কথা বল। (সূরা আহযাব ৩২)।"

আশা করছি ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস এবং আল্লাহ তা'আলার উপর ভরসা রাখলে আপনাদের সকলের জন্য পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় মিলবে। প্রিয় পাঠক আমরা আমাদের আলোচনার একদম শেষ অংশে চলে এসেছি। আমাদের শেষ অংশে জানব বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি । 

বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি

বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে বলা বোকামি হবে। কেননা পরকীয়া সংগঠিত হয় অত্যন্ত গোপনে। তাই এই সংক্রান্ত কোন সমীক্ষার ওপরে চোখ বুজে বিশ্বাস করা যায় না।তবে সংবাদ এবং মিডিয়ার মাধ্যমে ক্রমশই ব্যাপারটা সামনে আসছে যে, দিনের পর দিন পরকীয়ার সংখ্যা বেড়েই চলছে। 

পরকীয়ায় প্রথম স্থানে আছে নারায়ণগঞ্জ। দেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের কিছু ছেলে-মেয়ের উপরে এক পরিসংখ্যান চালানো হয়। সেখানে দেখা যায় ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ মেয়ে পর ছেলের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে আগ্রহী। আর ১৯ থেকে ২৭ বছর বয়সের মেয়েদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ পরকীয়ার সম্পর্ক তৈরিতে আগ্রহী। 

২৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ভেতরে ২০ শতাংশ নারী পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলেন।বিশেষভাবে লক্ষণীয় হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের মেয়েদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্কের প্রবণতা বেশি হলেও এখানকার ৫৬% লোকজন দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত। 

দ্বিতীয় স্থানে আছে ঢাকা। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের মেয়েদের মধ্যে এক সমীক্ষায় দেখা যায় ১৪ থেকে ২৭ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে শতকরা প্রায় ২৮ জন পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার জন্য বেশ আগ্রহী। তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ। দেশের পঞ্চম স্থানে রয়েছে নোয়াখালী এবং ষষ্ঠ স্থানে আছে চাঁদপুর।

প্রিয় পাঠক বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি সেটা স্পষ্ট ভাবে বলা না গেলেও আমরা আমাদের উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের কোন জেলার মেয়েদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেশি। তারপরেও নিশ্চিতভাবে সবগুলো জেলা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। কেননা সমীক্ষাটি একটি জেলার কিছু কিছু এলাকায় কতগুলো মেয়ের উপর চালানো তথ্য অনুসারে দেওয়া হয়েছে। 

মেয়েরা পরকীয়া করে কেন - পরকীয়া নারী চেনার উপায়ঃ শেষ কথা

সম্মানিত পাঠক আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে মেয়েরা পরকীয়া করে কেন, পরকীয়া নারী চেনার উপায় কি, স্ত্রী পরকীয়া করলে বোঝার উপায় কি, পরকীয়া ধরার উপায় কি, পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় কি, পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল কি, বাংলাদেশের কোন জেলায় পরকীয়া বেশি ইত্যাদি বিষয়াবলী সম্পর্কে যথাযথ তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আর যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটিকে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

তাহলে আপনার এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা কামনা করে আমাদের আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং পরবর্তীতেও এই রকম নতুন নতুন আর্টিকেল পড়ার জন্য নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩