বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম - পেপাল একাউন্ট ইন বাংলাদেশ

প্রিয় পাঠক আপনি কি বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম বা বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্যই। কেননা আমাদের এই পোস্টে আমরা বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে ধাপে ধাপে বর্ণনা করেছি। সুতরাং, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই পোস্টটি পড়ে নিন এবং বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম বা বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমাদের এই পোস্টের মধ্যে পেপাল সম্পর্কিত আরো যেসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো হলো- পেপাল কি, পেপাল কি কাজে ব্যবহৃত হয়, পেপাল একাউন্ট ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় কিনা (is paypal available in bangladesh), পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম, পেপাল থেকে বিকাশ (paypal to bkash) বা পেপাল থেকে টাকা তোলার নিয়ম সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম - পেপাল একাউন্ট ইন বাংলাদেশ

পেপাল কি 

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh) সম্পর্কে জানার পূর্বে যে বিষয়টি আমাদের জানা একান্তই প্রয়োজন সেটা হলো পেপাল কি। তাই আমরা  বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম বা বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত আলোচনা শুরু করার পূর্বে পেপাল কি সেটা জেনে নেব। মূলত পেপাল হলো একটি আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল পেমেন্ট মেথড বা সার্ভিস। আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল পেমেন্ট সার্ভিস বলার পেছনে কারণ হলো পেপাল ব্যবহার করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থের আদান-প্রদান বা লেনদেন করা হয়। 

পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করে লেনদেন করার ক্ষেত্রে লেনদেন প্রসেস হওয়ার বিষয়টি সম্পাদিত হয়ে থাকে ভার্চুয়াল সিস্টেমের মাধ্যমে। অর্থাৎ, পেপাল ব্যবহার করার পূর্বে বা পেপাল থেকে যাবতীয় সার্ভিসসমূহ নেয়ার পূর্বে একটি ভার্চুয়াল পেপাল একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় এবং তারপর উক্ত একাউন্টকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক লেনদেন করা হয়। সাধারণভাবে আমরা যেকোন ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পর ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা নেওয়ার জন্য ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকি। 

আরো পড়ুনঃ মোবাইল কিভাবে হ্যাক করা যায় - মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়

পেপাল একাউন্ট থেকে সার্ভিস নেওয়ার বিষয়টিও অনেকটা ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সার্ভিস নেওয়ার মতোই। কিন্তু এই দুইটি বিষয়ের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের জন্য কোন ভার্চুয়াল একাউন্ট থাকার প্রয়োজন হয় না কেবলমাত্র ম্যানুয়াল ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সার্ভিস আমরা পেয়ে থাকি। কিন্তু পেপালের ক্ষেত্রে পেপালর যাবতীয় সার্ভিস সমূহ নেওয়ার জন্য একটি ভার্চুয়াল পেপাল একাউন্ট থাকার প্রয়োজন হয়।

পেপাল কি কাজে ব্যবহৃত হয়

উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে পেপাল সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানার পর এবার স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, আপনি পেপাল একাউন্ট কেন খুলবেন বা বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh) সম্পর্কে কেনো জানবেন। অর্থাৎ বিষয়টা অনেকটা এই রকম যে, আপনি পেপাল একাউন্ট খোলার প্রয়োজনবোধ কেবল তখনই করবেন যখন আপনি পেপাল একাউন্ট কি কাজে ব্যবহৃত হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন। তাই এবার বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম জানার পূর্বে পেপাল কি কাজে ব্যবহৃত হয় সেই সম্পর্কে জেনে নেই।

  • পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি বাইরের দেশগুলো থেকে অনলাইনে আপনার প্রয়োজন মতো খুব সহজে কেনাকাটা করতে পারবেন এবং পেমেন্ট করতে পারবেন।
  • পেপাল একাউন্ট যেহেতু ডুয়েল কারেন্সি সিস্টেমে কাজ করে থাকে। তাই আপনি বাংলাদেশে বসে থেকেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে অর্থের আদান-প্রদান বা অনলাইন ভিত্তিক শপ গুলোতে কেনাকাটা করতে পারবেন। অর্থাৎ, ডুয়েল কারেন্সি সিস্টেমের বিষয়টা অনেকটা এই রকম যে, আপনার পেপাল একাউন্টে আপনি বাংলাদেশি টাকা জমা রাখলেন এবং সেই টাকা দিয়ে যদি আপনি আমেরিকার কোন অনলাইন শপ থেকে কোন পণ্য কিনতে চান তাহলে পেপাল একাউন্ট এর মাধ্যমে পেমেন্ট করলে আপনার বাংলাদেশি টাকা আমেরিকায় গিয়ে ডোলারে কনভার্ট হয়ে আপনার পেমেন্ট সম্পন্ন হবে।
  • পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করে আর্থিক লেনদেন সম্পাদন করার আরেকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হলো ফ্রিল্যান্সিং। কেননা যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তারা বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্লায়েন্টদের বিভিন্ন ধরনের অর্ডার বা কাজ সম্পাদন করার মাধ্যমে পেমেন্ট নিয়ে থাকে। আর পেমেন্ট নেওয়ার এই সিস্টেমটি খুব সহজেই সম্পাদিত হয় পেপাল একাউন্টের মাধ্যমে।
  • এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার পেপাল একাউন্টে প্রয়োজনমতো অর্থ সংরক্ষণ এবং পরবর্তীতে ইচ্ছা স্বাধীনভাবে উক্ত অর্থ উত্তোলনও করতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় কিনা (is paypal available in bangladesh)

আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে অনেকের মনেই পেপাল সম্পর্কিত বিষয়ে একটি সাধারণ প্রশ্ন জাগে। আর সেটা হলো বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় কিনা (is paypal available in bangladesh) বা পেপাল একাউন্ট খোলা বৈধ কিনা। তাই যাদের মনে এই রকম প্রশ্ন জাগে তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলব যে, আংশিক দিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় না। কিন্তু অপরদিক থেকে যদি আপনি দেখেন তাহলে কিছু কৌশল অবলম্বন করার মাধ্যমে বৈধভাবেই বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা সম্ভব। মূলত ২টি অপশনের মাধ্যমে পেপাল একাউন্ট তৈরি করা যায়। এগুলো হলো-

  • পার্সোনাল একাউন্ট (Personal Account) এবং 
  • বিজনেস একাউন্ট (Business Account)

এক্ষেত্রে পার্সোনাল একাউন্ট (Personal Account) অপশনটি ব্যবহার করে আপনি বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে পেপাল একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না। কেননা বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত পেপাল সাপোর্ট করে না। অর্থাৎ পেপালকে আমাদের দেশের আইপি (IP) থেকে ব্লক করা আছে। এজন্য উক্ত অপশনটির মাধ্যমে একাউন্ট তৈরি করা আমাদের দেশে বৈধ নয়। কিন্তু আমরা যদি দ্বিতীয় অপশনটির কথা ভাবি যেটা হলো বিজনেস একাউন্ট (Business Account)। এই অপশনটি ব্যবহার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে এবং খুব সহজে পেপাল একাউন্ট তৈরি করা যায়। 

আরো পড়ুনঃ মনিটরের প্রয়োজনীয়তা কি - মনিটরের প্রকারভেদ

এক্ষেত্রে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, আপনার তো কোন বিজনেস নাই সেক্ষেত্রে আপনি এই বিজনেস একাউন্ট (Business Account) অপশনটি সিলেক্ট করে কিভাবে পেপাল একাউন্ট খুলবেন। আপনার এই প্রশ্নটির সহজ উত্তর হলো আপনার যদি কোন বিজনেস একাউন্ট না থেকেও থাকে তারপরেও আপনি উক্ত অপশনটি ব্যবহার করার মাধ্যমে সহজেই পেপাল একাউন্ট খুলতে পারবেন। কিভাবে খুলবেন সেই প্রসঙ্গে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করতে চলেছি। 

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh)

উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছি  বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় কিনা (is paypal available in bangladesh)। এবার আমরা আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh) সম্পর্কে ধাপে ধাপে জেনে নেব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আলোচনা শুরু করা যাক।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়মঃ ধাপ- ০১

  • পেপাল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ১ম ধাপ হলো পেপালের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা। পেপালের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার জন্য আপনি আপনার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ কিংবা অন্য যেকোন ব্যবহৃত ডিভাইস থেকে আপনার ওয়েব ব্রাউজারটি ওপেন করে নিবেন। 
  • এরপর যদি আপনি আপনার ব্রাউজারে PayPal.com লিখে সার্চ দেন তাহলে সার্চ রেজাল্টে আপনার সামনে কতগুলো ওয়েবসাইটের লিঙ্ক চলে আসবে। উক্ত লিঙ্ক গুলোর মধ্যে প্রথমেই যে লিঙ্কটি থাকবে আপনি যদি সেই লিঙ্ক-এর মধ্যে প্রবেশ করেন তাহলেই আপনি পেপালের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটি পেয়ে যাবেন। 
  • এছাড়াও আপনার যদি এই প্রসেসটুকু কিছুটা ঝামেলার মনে হয় তাহলে সরাসরি পেপালের ওয়েবসাইট এর মধ্যে প্রবেশ করার জন্য আপনি এই লিঙ্কে চাপ দেওয়ার মাধ্যমেও পেপালের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন। 
  • এবার পেপালের ওয়েবসাইটের মধ্যে দেখবেন সাইন ইন (Sign In) নামক একটি অপশন রয়েছে। নতুন পেপাল (PayPal) একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সাইন-ইন (Sign In) অপশনে ক্লিক করতে হবে। কিন্তু যদি ইতিমধ্যে আপনার কোন পেপাল একাউন্ট থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি লগইন (Log In) অপশনটিতে ক্লিক করার মাধ্যমে আপনার পেপাল একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন। 
  • ক্লিক করার পর আপনার সামনে ২টি নতুন অপশন সামনে আসবে। একটি হলো গেট এ পার্সোনাল একাউন্ট (Get a Personal Account) এবং অপরটি হলো গেট এ বিজনেস একাউন্ট (Get a Business Account)। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই বিজনেস একাউন্ট (Business Account)-এর অপশনটি সিলেক্ট করে নিবেন।কেননা বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত পেপালের পার্সোনাল একাউন্ট (Personal Account) খোলার অনুমতি নেই। 

উপরিউক্ত কাজগুলো সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে আপনার পেপাল একাউন্ট খোলার ১ম ধাপ সম্পূর্ণ হবে।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়মঃ ধাপ- ০২

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত উপরিউক্ত ১ম ধাপটি সম্পন্ন করার পর পেপাল একাউন্টের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার জন্য একটি নতুন ইন্টারফেস আপনার সামনে আসবে। যেখানে মূলত ৪টি আলাদা আলাদা তথ্য পূরণের জন্য তথ্য বক্স থাকবে। এগুলো হলোঃ

লিগ্যাল ফার্স্ট নেম (Legal First Name): এই অংশে আপনাকে আপনার নামটিকে ২ ভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগের নামটি বসিয়ে তথ্য বক্স পূরণ করতে হবে।

লিগ্যাল লাস্ট নেম (Legal Last Name): এই অংশে আপনাকে আপনার নামের শেষের অংশটি বসিয়ে তথ্য বক্স পূরণ করতে হবে। এই বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝালে আপনি হয়তো ভালো বুঝতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনার পুরো নাম আব্দুর রহিম। এক্ষেত্রে আপনার লিগ্যাল ফার্স্ট নেম (Legal First Name) হবে আব্দুর এবং আপনার লিগ্যাল লাস্ট নেম (Legal Last Name) হবে রহিম।

ই-মেইল অ্যাড্রেস (Email Address): এই অংশে আপনি অবশ্যই আপনার নিজের ব্যবহৃত ই-মেইল অ্যাড্রেসটি নির্ভুলভাবে দিবেন। কেননা এখানে যেই ই-মেইল অ্যাড্রেসটি দিয়ে আপনি পেপাল একাউন্ট তৈরি করবেন পরবর্তীতে সেই ই-মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করেই আপনি আপনার পেপাল একাউন্টের অ্যাক্সেস নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে পেপাল একাউন্ট তৈরীর সময় আপনি যে ই-মেইল অ্যাড্রেসটি ব্যবহার করবেন সেই ই-মেইল অ্যাড্রেসটির সাইবার নিরাপত্তা আপনাকে পূর্বেই নিশ্চিত করে নিতে হবে। 

কেননা আপনি যদি আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেসের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেি উক্ত ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে পেপাল একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে আপনার পেপাল একাউন্ট হ্যাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এখানে ই-মেইল অ্যাড্রেসের সাইবার নিরাপত্তা বলতে মূলত ই-মেইল অ্যাড্রেসে দুই ধাপ যাচাইকরণ প্রক্রিয়া বা Two Step Verification সিস্টেম চালু করার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।

পাসওয়ার্ড (Password): এই অংশে আপনাকে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এখানে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বলতে যে বিষয়টি বোঝানো হয়েছে সেটা হলো আপনার পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই ৮ থেকে ২০ ক্যারেক্টারের মধ্যে হতে হবে, এই ক্যারেক্টার গুলোর মধ্যে অবশ্যই বড় হাতের অক্ষর থাকতে হবে এবং অবশ্যই সংখ্যা থাকতে হবে। এই অংশে যে পাসওয়ার্ডটি দিয়ে আপনি পেপাল একাউন্ট খুলবেন মূলত উক্ত পাসওয়ার্ডের মাধ্যমেই আপনি পরবর্তীতে আপনার পেপাল একাউন্টে অ্যাক্সেস নিতে পারবেন। 

এজন্যই এই পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড হওয়া প্রয়োজন। যাতে করে হ্যাকাররা আপনার পেপাল একাউন্টে পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে না পারে। পাসওয়ার্ড সেট করার সময় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সেটা হলো পাসওয়ার্ড কখনোই গুগলে সেভ করবেন না।

উপরিউক্ত যাবতীয় তথ্য বক্সগুলো সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করার পর আপনি এগ্রি এন্ড ক্রিয়েট একাউন্ট (Agree and Create Account) অপশনটিতে ক্লিক করার মাধ্যমে পেপাল একাউন্ট খোলার ২য় ধাপটি সম্পন্ন করবেন।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়মঃ ধাপ- ০৩

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত তৃতীয় ধাপে আপনাকে যে কাজ গুলো সঠিক ভাবে সম্পাদন করতে হবে সেগুলো নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

  • পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত ২য় ধাপটি সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনার সামনে একটি নতুন ইন্টারফেস আসবে। যেখানে ২টি অপশন দেখতে পাবেন। একটি হলো সোল প্রোপাইটরশিপ (Sole Proprietorship) এবং অপরটি হলো কোম্পানি (Company)। এই দুটি অপশন এর মধ্যে আপনি অবশ্যই প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করবেন।
  • প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করার পর আপনার সামনে আরো কতগুলো তথ্য বক্স চলে আসবে যেখানে আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে তথ্য বক্স গুলো পূরণ করতে হবে। এখানে প্রথমে আপনার বিজনেস এর নাম দিতে বলবে। আপনার যদি কোন অনলাইন অথবা অফলাইন বিজনেস থেকে থাকে তাহলে এখানে উক্ত বিজনেস এর নাম দিবেন। কিন্তু যদি এরকম কোন বিজনেস আপনার না থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার বাস্তব কাজ সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে এই তথ্য বক্সটি পূরণ করবেন। 
  • তারপর আপনার ফোন নাম্বার চাওয়া হবে। এখানে অবশ্যই আপনার নিজের ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি দিবেন এবং ফোন নম্বরটি লেখার সময় অবশ্যই এটি ইন্টারন্যাশনাল ফরমেট অনুযায়ী লিখবেন। যেমন আমাদের দেশের কান্ট্রি কোড হলোঃ (+880 )। অর্থাৎ, আপনার ফোন নম্বরটি লেখার পূর্বে উক্ত কোডটি অবশ্যই আপনাকে যুক্ত করতে হবে।
  • পেপাল একাউন্টে বিজনেস একাউন্ট (Business Account) খোলার সময় ফোন নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ড্রপডাউন (Drop Down) আইকন থাকেনা। যার ফলে এখানে দেশের নাম সিলেট করার প্রয়োজন পড়ে না। আর এজন্যই মূলত বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে বিজনেস একাউন্টে মাধ্যমে পেপাল একাউন্ট খোলা যায়। কিন্তু যেহেতু পার্সোনাল একাউন্ট (Personal Account) খোলার ক্ষেত্রে উক্ত ড্রপডাউন (Drop Down) আইকন থাকে তাই বাংলাদেশ থেকে পেপালের পার্সোনাল একাউন্ট খোলা সম্ভব হয় না।
  • এরপর আপনাকে আপনার বিজনেসের ঠিকানা দিতে হবে ঠিকানার জায়গায় আপনি আপনার বিজনেসের ঠিকানা, পোস্ট অফিস, থানা, জেলা, পোস্টাল কোড এবং সিটির নাম দিয়ে উক্ত তথ্য বক্স গুলো সঠিকভাবে পূরণ করে নিবেন। এ ক্ষেত্রে কখনোই কোন জায়গায় কোন ভুল তথ্য দিবেন না। নাহলে পেপাল একাউন্ট খোলার পরে যেকোনো মুহূর্তে আপনার একাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে। আর একাউন্ট ব্যান হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো আপনার একাউন্টে থাকা অর্থ আপনি কখনোই ফেরত পাবেন না।
  • তারপর প্রভিডেন্স (Providence) নামে একটি তথ্য বক্স পাবেন যেখানে আপনি বাংলাদেশের নাম খুঁজে না পেলে জন্য যেকোনো একটি নাম সিলেক্ট করে দিবেন।
  • এরপর যাবতীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আপনি পেপালের Terms and Conditions সেকশন এ ক্লিক করে পেপালের যাবতীয় Terms and Conditions গুলো বিস্তারিত পড়ে নিবেন। যাতে করে আপনি জানতে পারেন যে কোন কাজগুলো করলে আপনার পেপাল একাউন্ট পরবর্তীতে ব্যান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • এরপর উক্ত Terms and Conditions গুলোর সঙ্গে Agree করার মাধ্যমে আপনি পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম এর ৩য় ধাপটি সফলভাবে সম্পাদন করবেন।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়মঃ ধাপ- ০৪

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত ৪র্থ ধাপে আপনাকে যে সমস্ত কাজ করতে হবে সেই কাজগুলো সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

  • পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত উপরিউক্ত ৩য় ধাপটি সফলভাবে সম্পাদন করার পর আপনি ৪র্থ ধাপে একটি নতুন ইন্টারফেস দেখতে পারবেন যেখানে "Describe Your Business" নামে একটি অপশন থাকবে। 
  • এরপর বিজনেস টাইপ (Business Type) সিলেক্ট করার জন্য আপনি অবশ্যই ইন্ডিভিজুয়াল (Individual) বিজনেস টাইপ সিলেক্ট করবেন এবং আপনি প্রডাক্ট এবং কি সার্ভিস (Product and Key Service) নামে একটি নতুন তথ্য বক্স দেখতে পারবেন যেখান থেকে অবশ্যই আপনাকে বিজনেস সার্ভিস (Business Service) অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। 
  • এরপর আপনার বিজনেসের ভ্যালু (value) জানতে চাওয়া হবে যেখান থেকে আপনি সর্বনিম্ন ভ্যালুটি বেছে নিবেন। 
  • বেছে নেওয়ার পর এবার আপনার কাছে আপনার বিজনেস শুরু হওয়ার তারিখ জানতে চাওয়া হবে এখানে আপনি ইচ্ছামতো যেকোনো একটি তারিখ দিলেও কোন সমস্যা হবে না এবং সেই সঙ্গে আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক চাওয়া হবে যদি আপনার কোন ওয়েবসাইট থেকে থাকে তাহলে এখানে সেই লিঙ্কটি দিয়ে দিবেন। আর যদি কোন ওয়েবসাইট না থেকে থাকে সেক্ষেত্রে লিঙ্ক না দিলেও কোন সমস্যা নেই।
  • এরপর উক্ত তথ্য গুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হলে সাবমিট (Submit) অপশনটিতে ক্লিক করবেন এবং এটি ক্লিক করার মাধ্যমে আপনার পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত ৪র্থ ধাপটি আপনি সফলভাবে সম্পাদন করবেন।

বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়মঃ ধাপ- ০৫

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কিত ৪র্থ ধাপটি আপনি যদি সফলভাবে সম্পাদন করতে পারেন তাহলে পেপাল একাউন্ট খোলার ৫ম ধাপটির সূচনা হবে। আর এই ধাপটিতে আপনি ‘Tell us more about you’  নামে একটি সেকশন দেখতে পারবেন যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে তথ্যবক্স গুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

  • প্রথমে আপনার জন্ম তারিখ চাওয়া হবে। এখানে অবশ্যই আপনার সঠিক জন্ম তারিখ দিয়ে তথ্যবক্স পূরণ করবেন। 
  • এরপর আপনার Occupation জানতে চাওয়া হবে। এখানে আপনি চাইলে বিজনেস অথবা অন্য কোন প্রাসঙ্গিক Occupation সিলেক্ট করতে পারেন। 
  • এবার আপনার ব্যক্তিগত ঠিকানা অর্থাৎ বাসার ঠিকানা চাওয়া হবে। যেখানে আপনি চাইলে আপনার বিজনেস ঠিকানাটি দিতে পারেন অথবা চাইলে আলাদা ঠিকানাও দিতে পারেন।

উক্ত ধাপ গুলো সফলভাবে সম্পাদন করার পর আপনার পেপাল একাউন্ট তৈরি করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে এবং আপনার সামনে পেপাল একাউন্টের ড্যাশবোর্ড (Dash Board) চলে আসবে। আর এই ড্যাশবোর্ডে (Dash Board) আপনি আপনার পেপাল একাউন্ট থেকে যেই সার্ভিস সমূহ গ্রহণ করতে চলেছেন সেই সম্পর্কিত যাবতীয় অপশনগুলো আপনি দেখতে পা্বেন। যেমন আপনার একাউন্ট ব্যালেন্স, টাকা লেনদেন করার অপশন, একাউন্টে টাকা জমা করার অপশন ইত্যাদি।

পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম

আমরা আমাদের আলোচনার এই পর্যায়ে পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম সম্পর্কে জানব। কেননা বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh) সম্পর্কে জানার পর আপনি খুব সহজেই পেপাল একাউন্ট খুলতে পারবেন। কিন্তু একাউন্ট খোলার পর উক্ত একাউন্ট কোনরকম বিঘ্নতা সৃষ্টি হওয়া ছাড়াই পরিচালনা করার ক্ষেত্রে আপনাকে উক্ত পেপাল একাউন্ট অবশ্যই ভেরিফাই করে নিতে হবে। তাহলে চলুন পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। পেপাল একাউন্ট সফলভাবে ভেরিফাই করতে ৩টি ধাপে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াটি সম্পাদন করতে হয়। আর এগুলো হলো নিম্নরুপঃ

মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন (Phone Number Verification): পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য প্রথমে আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যেই মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করে আপনার পেপাল একাউন্ট খুলেছিলেন সেই নাম্বারটি আপনাকে ভেরিফাই করতে হবে।

দুই ধাপে ভেরিফিকেশন (Two Step Verification): এবার আপনার পেপাল একাউন্টে দুই ধাপে যাচাই করণ প্রক্রিয়াটি চালু করে নিতে হবে। এতে করে আপনার পেপাল একাউন্টের সুরক্ষা অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে। কেননা প্রতিবার আপনি যখন আপনার পেপাল একাউন্টে লগইন করতে যাবেন তখন আপনার পেপাল একাউন্টের পাসওয়ার্ড দেওয়ার পাশাপাশি ওয়ান টাইম ওটিপি, অথবা ওয়ানটাইম কিছু ব্যাকআপ কোড দিয়ে আপনাকে আপনার একাউন্টে লগইন করতে হবে। যার মাধ্যমে পেপাল একাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ মনিটর কে আবিষ্কার করেন - মনিটর এর বৈশিষ্ট্য

জাতীয় পরিচয় পত্র ভেরিফিকেশন (NID Card Verification): এই ধাপটির মাধ্যমে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি আপনার পেপাল একাউন্টে আপলোড করার মাধ্যমে আপনার পেপাল একাউন্টের ভেরিফিকেশন সম্পাদন করবেন। এক্ষেত্রে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ভেরিফিকেশন করার পরিবর্তে জন্ম সনদ, পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্সও ভেরিফাই করতে পারবেন।

উপরিউক্ত ধাপগুলোর মাধ্যমে আপনার পেপাল একাউন্টের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পাদিত হবে এবং এরপর আপনাকে আপনার পেপাল একাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ড যুক্ত করে নিতে হবে কিংবা আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টটিও যুক্ত করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করার ক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্টটি অবশ্যই বিজনেস একাউন্ট হতে হবে। 

বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম - পেপাল একাউন্ট ইন বাংলাদেশঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আমাদের এই পোস্টের মধ্যে পেপাল কি, পেপাল কি কাজে ব্যবহৃত হয়, পেপাল একাউন্ট ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় কিনা (is paypal available in bangladesh), বাংলাদেশ থেকে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম (how to create a paypal account in bangladesh) এবং পেপাল একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম নসম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করছি আমাদের আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি পরবর্তীতেও এরকম নতুন নতুন পোস্ট পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩